Bangla choto golpo
পানু মিয়া
ইরান হাসপাতালে আসার আগেই পানু গিয়ে হাসপাতালের গেটে দাড়িয়ে থাকে। তারপর বন্ধু আসলে হাসি হাসি মুখে এগিয়ে গিয়ে বুক পকেট থেকে একটি বেনসন সিগারেট বের করে এগিয়ে দেয়। আপাতত এটাই তার রোগী দেখার ফি। গত তিনদিন ধরে এই অবস্থা চলছে।
নাঈমার মা ইসমত আরা বেগম খুব খুশি। তার ধারণা নাঈমার বন্ধু বিরাট ধনি। ডাক্তার তার কথায় ওঠ বস করে। তিনি মেয়েকে একবার জিজ্ঞেস করেছে, হ্যাঁ রে নিমু ছেলে তো বিরাট ধনী। নাঈমা উত্তর দেয়নি চুপ করে থেকেছে। উত্তর দেবার মতো অবস্থা পানুর নেই। পুরোটা না জানলেও আন্দাজ করতে পারে সে। একজন মানুষকে ভালোবাসবে কিন্তুু তাকে বুঝবে না, তা কি করে হয়। সেদিন বৃষ্টি থামলে তারা অনেকটা সময় পাশাপাশি কাটিয়েছিল। কি সুন্দর করে কবিতা আবৃত্তি করে পানু।
"মাঝে মাঝে দুর আকাশের নক্ষত্র গুলোকে খুব আপন হয়। মনে হয় সহস্র বছর আগের আমি সেখানে ছিলাম। উতপ্ত লাভায় ডুবে আমি কি যেন খুজেছি। মনে হয় ওখানের কোন ধুলি ঝড়ের বাতাস হয়েই ছিলাম অনেক আগেই। তারি মাঝে হারিয়ে যাওয়া কোন চোখে কি যেন খুজেছি সহস্র কাল আগেই..."
বাড়ি ফিরে আয়নার সামনে দাড়াতেই কেপেঁ ওঠে নাঈমা। কথায় কথায় পানুর গায়ে হাত পড়েছিল বোধহয়। খুব আপনজনের গায়ে আপনা থেকেই হাত চলে যায়। হাতে ভেজা পাঞ্জাবির রং লেগে আছে খেয়াল করেনি একবারও! ভীষণ লজ্জা পায় সে। আনন্দে হাতটাই কেটে ফেলতে ইচ্ছে হয় তার।
নাঈমা মনে মনে ঠিক করে ফেলে, টাকা জমিয়ে দামী একটা পাঞ্জাবি সে পানুকে কিনে দিবে। তাহলে রং উঠবে না। রং ওঠাও তো খারাপ না...!
গেটে আওয়াজ পড়ছে, সম্ভবত ডাক্তার এসেছে। নূরী প্রানপণে দরজার দিকে ছুটছে....
Post a Comment