Bangla choto golpo
পানু মিয়া
নাঈমাদের বাড়িতে পানুর চায়ের দাওয়াত। ঠিক বিকেল চারটায়।এ সময় নাঈমার বাবা বশির খা নিয়ম করে বাইরে থাকেন। সেদিন নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলো। বশির খা বাড়িতেই বসে রইলেন। পানুর সাথে তার কথোপোকথন
- তোমার নাম?
- জ্বী আমার ভালো নাম ফরমানুদ্দীন। বাবা পানু বলে। এখন সবাই আমাকে পানু ডাকে।
বশির খা'র দৃষ্টি স্থির হয়ে গেলো। সামান্য অস্বাভাবিকতায় ওনার দৃষ্টি স্থির হয়ে যায়।
- আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাও?
- জ্বী না। আপনার মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায়।
- তুমি চাও না?
- না।
- কেনো?
পানুকে চুপ করে থাকতে দেখে বশির খা প্রসঙ্গ পাল্টালেন।
- ছোট মেয়েটা বলল, নাঈমার জন্যে তুমি ডাক্তার পাঠিয়েছিলে।
- জ্বী, ডাক্তার আমার বন্ধু।
- ও আচ্ছা, তুমি কি করছ?
- আমি লেখক।
- খুব ভালো। কয়টি বই বেরিয়েছে?
- জ্বী একটাও না।
- তাহলে নিজেকে লেখক বলছ যে?
- লেখক হতে হলে বই ছাপতে হবে, এমন তো নয়। আমি লিখি, তাই লেখক।
- আচ্ছা বুঝতে পারছি। তুমি যে নাঈমাকে পছন্দ করো সেটা স্পষ্ট। কিন্তু বিয়ে করতে চাওনা, এর পিছনে কি যুক্তি দাড় করাতে চাও?
- আমি যা চাই সব সময় তার উল্টো টা হয়।
- তোমার চাওয়ায় কমতি থাকতে পারে। এ ব্যাপারে কখনো ভেবেছ?
পানু উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। এ ব্যাপারে সত্যি সে কখনো ভাবেনি। চাওয়া শব্দটির সাথে পাওয়া নামক শব্দটি ব্যাবহার হয়। কিন্ত সেই চাওয়াটা পাওয়ায় পরিনত হতে চাওয়াটা কি পরিমান হবে এই ব্যাপারের কোন মাপকাঠি থাকলেও সেটা তার অজানা। মাথার উপর ফুল স্পিডে ফ্যান ঘুরলেও সে ঘামছে। বশির খা কিছুক্ষণ ভ্রু কুচকে বসে থেকে উঠে চলে গেছেন। নাঈমা কখন এসে দাড়িয়েছে বুঝতেই পারেনি পানু।
- ঘামছো কেন?
- পিপাসা পেয়েছে, পানি খাব।
নাঈমা ভেতরে চলে গেলো। তার ক্ষনিক পরেই নুরী শরবত হাতে ঘরে ঢুকল। সে মিটিমিটি হাসছে।
- ভাইয়া আমার চোখ মাঝে মাঝে লাল হয়ে যায়। ডাক্তার সাহেব কে একদিন পাঠাবেন।
পানু নুরীর চোখের দিকে তাকালো। সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে মেয়েটির চোখে ইরানের জন্যে চাওয়া আছে। কিন্ত সেটা কি পরিমান, সে ধরতে পারছে না। খুব সম্ভব যাকে চাওয়া সে ধরতে পারবে। পানু ঠিক করে সে নাঈমা কে জিজ্ঞেস করবে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো তো আমি তোমাকে কি পরিমান চাই...
Post a Comment